সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার মাষ্টার বলেছেন, একটা সময় নৌযান শ্রমিকদের অধিকার বলতে কিছু ছিল না। মজুরী বৃদ্ধির দাবি জানালে নাম মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়ানো হতো। প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে মালিকপক্ষের দালাল বিরাজমান ছিল।
কিন্তু শ্রমিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার নৌযান শ্রমিকদের মজুরী ২ হাজার ৩০০ টাকা থেকে বর্তমানে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় পরিণত করেছেন। ঝড় আসলে পাখি নীড়ে ফিরে যায়, গরু গোয়ালে ফিরে যায় কিন্তু নৌ পথের শ্রমিকদের প্রচন্ড ঝড় তুফানের মধ্যে উত্তাল জলরাশির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়।
কিন্তু তারপরেও নৌযান শ্রমিকদের তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। তাদেরকে নৌপথে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, লুটপাট, নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। বাংলাদেশে যতগুলো শ্রমিক সেক্টর রয়েছে তার মধ্যে নৌ শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করে থাকে। তারা পরিবার পরিজন ফেলে রেখে মাসের পর মাস বাড়ির বাইরে থাকে। ঈদ উৎসবেও পরিবারকে সময় দিতে পারেনা। সাধারণ মানুষকে গন্তব্যে পৌছানো এবং খাদ্যদ্রব্য সহ আনুষাঙ্গিক পণ্য পৌঁছানোর কাজ করে থাকে। অথচ তারা ন্যায্য মজুরী পাচ্ছে না। একজন মালিক একটি জাহাজ থেকে অসংখ্য জাহাজের মালিক বনে গেলেও শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়না।
তিনি আরো বলেন, আমরা শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলি বিধায় একটি কুচক্রী মহল রয়েছে যার মালিকপক্ষের দালাল হিসেবে নানা ষড়যন্ত্র করে থাকে। তারা বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে ছবি টানিয়ে রেখে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তারা শ্রমিকদেরকে মন্ত্রী এমপিদের কথা বলে নানা ধরনের হুমকি ধমকি ভয়ভীতি দেখিয়ে থাকে। ওই সকল মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে তাদের কোন যোগাযোগও থাকেনা। তাই নৌযান শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষে আমাদেরকে আরো শক্তিশালী আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নদী পথে সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও শ্রমিকদের উপর নির্যাতন বন্ধ করাসহ নিরাপদ নৌপথ গড়ে তুলতে হবে। নৌ পুলিশ ও বিআইডবিøউটিএ’র অসাধু কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
মঙ্গলবার ১৫ জানুয়ারী বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের বরফকল খেয়াঘাট সংলগ্ন জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের কালচারাল ট্রেনিং সেন্টারে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ও শাখার কমিটির সমন্বয়ে চলতি বছরের প্রথম সাংগঠনিক সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসকল কথা বলেন সবুজ শিকদার।
সভায় জাতীয় শ্রমিকলীগ ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সোমবার রাতে তার বোন ইন্তেকাল করায় তিনি সভায় উপস্থিত হতে পারেননি।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন জেলা শাখার সভাপতি সরদার আলমগীর মাষ্টারের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঘাট শ্রমিক লীগের নেতা মো. শাহআলম, বিআইডবিøউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন চুন্নু মাষ্টার, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা নিজামউদ্দিন খান, লিয়াকত হোসেন, কবির হোসেন, দশআনি মোহনপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, মো. নিজাম, মো. আলিম, খোরশেদ আলম, পান্না মিয়া প্রমুখ।